গামবোরো রোগ / মুরগির AIDS রোগঃ
এই রোগটি সম্পর্কিত ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন
গামবোরো ভাইরাসজনিত একটি ছোয়াচে রোগ ।ভিরনা ভাইরাস দ্বারা এ রোগ হয়ে থাকে।এ রোগে মুরগির লসিকা গ্রন্থি বারসাকে আক্রান্ত করে বলে তাকে ইনফেকসাস বারসাল ডিজিজ বলা হয় ।এ রোগে মুরগির রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা আক্রান্ত হয় তাই গামবেরো রোগকে Avian AIDS /Poultry AIDS বলে।এ রোগে মৃত্যুর হার ২০- ৯০%।
গামবোরো রোগ সাধারণত ৩-৬সপ্তাহের মুরগির বাচ্চায় তীব্র আকারে দেখা দেয় । তবে ০-৩ সপ্তাহের বাচ্চায় এ রোগ হতে পারে ।মুরগি ছাড়া হাঁস ,টার্কি এবং গিনি ফাউলে এ রোগ হয় ।আক্রান্ত বাচ্চা মুরগির পায়খানার মাধ্যমে এই ভাইরাস পরিবেশে আসে পরে দূষিত খাদ্য ,পানি এবং লিটারের (মুরগির বিছানা )মাধ্যমে এ ভাইরাস এক মুরগি থেকে অন্য মুরগিতে ছড়ায় ।বিভিন্ন ধরনের জীবাণুনাশক এবং পরিবেশের বিরুদ্ধে এই ভাইরাস প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে এবং আক্রান্ত মুরগির ঘরে এই ভাইরাস ৪মাস পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে ।তাই কোন ফ্লক একবার আক্রান্ত হলে পরবর্তী ফ্লক আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় ।বাচ্চার দেহে এ রোগের মা থেকে প্রাপ্ত এন্টিবডির মাত্রা না জেনে টিকা দিলে এ রোগ হতে পারে । বিভিন্ন ধরনের ধকল এ রোগ হওয়ার জন্য সহায়ক ভূমিকা হিসেবে পালন করে ।ক্রটিযুক্ত টিকার মাধ্যমে এ রোগ ছড়াতে পারে ।
লক্ষণঃ
*হঠাৎ করে শুরু হয় এবং মৃত্যুর হার বেড়ে যায় ।সাধারণত আক্রান্ত হওয়ার প্রথম ২দিন মৃত্যুর হার বেশি থাকে এবং শেষের ২-৩দিনের মধ্যে মৃত্যুর হার দ্রুত কমে যায় ।
*মুরগির পালক উসকো -খুসকো থাকে ।
*পাতলা পায়খানা করে ,পায়খানায় চুনের পরিমাণ বেশি থাকে এবং পানিশূন্যতায় ভোগে ।
*অনেক মুরগি নড়া -চড়া করতে অনীহা দেখায় এবং এক জায়গায় বসে থাকে ।
*শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং কাঁপতে থাকে ।
*মুরগির মধ্যে ঝিমানো ভাব দেখা যায় ।
*খাদ্য ও পানি গ্রহণ করার ক্ষমতা কমে যায় যার ফলে ওজন হ্রাস পায় ।
*অনেক মুরগির পা ল্যাংড়া হয়ে যায় ।
এছাড়া,
*মুরগির পা ও রানের মাংসের ওপর রক্তের ছিটা দেখা যায় ।
*বার্সা ফুলে যায় এবং বার্সা কাটলে ভিতরে রক্তের ছিটা এবং পুঁজ পরিলক্ষিত হয় ।তবে রোগের শেষ পর্যায়ে বার্সা আকারে ছোট হয়ে যায় ।
*মুরগির বৃক্ক ফুলে ফ্যাকাশে দেখা যায় ।
টিকাদান কর্মসূচিঃ
গামবোরো রোগ প্রতিরোধের জন্য টিকা ব্যবহার করতে হবে ।যে কোন বাচ্চার টিকা দেয়ার আগে মা থেকে প্রাপ্ত এন্টিবডির মাত্রা জেনে নিতে হবে ।সুস্থ বাচ্চাকে টিকা দিতে হবে এবং অসুস্থ বাচ্চাকে টিকা দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে ।টিকা দেয়ার সময় বাচ্চার ওপর যেন কোনো ধকল না পরে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে ।
★ব্রয়লার বাচ্চার ক্ষেত্রে সাধারণত ১৪ দিন বয়সে জীবন্ত টিকা দেয়া হয় ।টিকা ড্রপারের মাধ্যমে বা খাওয়ার পানির মাধ্যমে দেয়া যেতে পারে ।ব্রয়লারের বুস্টার ডোজ ২১ -২৮ দিনের মধ্যে দেয়া যেতে পারে।
★লেয়ারের ক্ষেত্রে সাধারণত ১ দিন বয়সে মৃত টিকা দেয়া হয় ।তারপর ১৪ দিন ও ২১ – ২৮ (বুস্টার ডোজ ) দিনের মধ্যে জীবন্ত টিকা দেয়া হয় ।ব্রয়লারের ক্ষেত্রে মৃত টিকা দেয়ার প্রয়োজন হয় না কারণ তার জন্য দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধ করার দরকার হয় না এর আগে এর বাজারজাত করা হয় ।
চিকিৎসাঃ
সাধারণত ভাইরাসঘটিত রোগের সুনির্দিষ্ট কার্যকরী চিকিৎসা নেই।
তবে ২য় পর্যায়ের সংক্রামণ প্রতিরোধে এন্টিবায়োটিক (Antibiotics) প্রয়োগ করা যায়।
যেমন-
Ciprocin-vet solution /Enflox-vet solution /Cotra-vet powder/moxacil-vet powder /cosumix plus
এইগুলার যেকোনো একটা এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যেতে পারে।
এর সাথে সহায়ক চিকিৎসা হিসেবে নিন্মোক্ত ওষুধ গুলা ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
১) Electromin Powder
2) Cevit-Vet Powder
বিঃদ্রঃ সকল চিকিৎসা একজন অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ানের পরামর্শক্রমে দিতে হবে।
g